বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় সরকারী পাহাড় দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ‘আবাসন প্রকল্পটি’ গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এসময় কথিত ওই আবাসন প্রকল্পে পাহাড় কেটে অবৈধভাবে নির্মিত শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজিম উদ্দীন। বুধবার ( ২৪ অক্টোবর) জেলা পুলিশের সহযোগীতায় এ অভিযান পরিচালনা চালিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
অভিযানের নেতৃত্বদেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনোয়ারুল আবছার। এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজিম উদ্দীন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজিম উদ্দীন জানান, কক্সবাজার শহরে সমুদ্র সৈকতের পাশে হোটেল-মোটেলেে পাশে প্রায় ৯০ একরের একটি অক্ষত পাহাড় রয়েছে। খাস জমি হিসেবে এ পাহাড়ের মালিক সরকার। কিন্তু প্রশাসনের অগোচরে কয়েক মাস ধরে এ পাহাড়ের জমি দখল করে লাইট হাউজ সমবায় সমিতির আবাসন প্রকল্পের নামে স্থাপনা নির্মাণ করছে সংজ্ঞবদ্ধ একটি চক্র। ৪০ বর্গফুট আয়তনের একেকটি প্লট দুই থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। গত তিন মাসে পাহাড়ের বিভিন্ন প্লটে শতাধিক টিনের ঘর তৈরি করা হয়েছে। এসব স্থাপনা তৈরিতে পাহাড়ও নির্বিচারে কাটা হয়েছে। এ বিষয়ে ইয়েস কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ মামুনের একটি রিট মামলার (ক্রিমিনাল মিস মামলা নং-৩০১২৩) প্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের এ নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আজ (২৪ অক্টোবর) এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
প্রশাসনের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযানের সময় সরকারী জমি দখল ও পাহাড় কাটার মূল হুতা আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তি পালিয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হাইকোর্টে রিট মামলার বাদী ইয়ুথ এনভায়রণমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ মামুন বলেন,‘ উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারি পাহাড় কেটে লাইট হাউজ সমবায় সমিতির আবাসন প্রকল্পের নামে স্থাপনা নির্মাণ করে আসছিল সংজ্ঞবদ্ধ একটি চক্র। এ পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে অঅমার বিরুদ্ধ একটি মামলাও করেছে পাহাড় খেকোরা। যা পুলিশের তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নজরে আনলে জেলা প্রশাসন পুলিশ বিভাগকে সাথে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার শহরে একমাত্র অক্ষত পাহাড়টি রক্ষা পেয়েছে। একই সাথে রক্ষা পেয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশও।’
পাঠকের মতামত: